ক্রসফায়ারের হত্যা চেষ্টা ও ইয়াবা দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ এনে ছাগলনাইয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম মুর্শেদসহ ১১ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) সকালে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে মোঃ গিয়াস উদ্দিন দুলাল নামে এক ব্যাক্তি মামলা করেন। এতে ১৩ জনকে আসামী করা হয়েছে। এরমধ্যে ১১ জন পুলিশের কর্মকর্তা ও সদস্য ,বাকী দুইজন পুলিশের সোর্স।পরে আদালত মামলটি তদন্ত করে জেলা পুলিশ সুপারকে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেন।
মামলা বিবরনে জানা যায়,বাদি গিয়াস উদ্দিন দুলাল একজন পিকআপ চালক ।তিনি, গত বছরের ১৭ জানুয়ারী দুপুরে ফেনী সদরের কাজীরবাগে মাটি ক্যারিং করা সময় মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে থানার আবুল হাসেম ও আবুল খায়ের নামে দুই সোর্সসহ পুলিশ সদস্যরা এসে তার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে।এসময় তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে বিকালে তারা কাজীরবাগ থেকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে ছাগলনাইয়ার পাঠাননগর এলাকায় ব্রাদার্স ব্রিকফিল্ডের নিয়ে যায়। সেখানে ওসি মোর্শেদ এসে চোখ বেঁধে পুনরায় ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেন।কিন্তু চাঁদা দিতে অস্বিকৃতি জানালে তারা ক্রসফায়ারের হুমকি দেয়।পরে খবর পেয়ে মা ও বোন ১ লাখ দেবার কথা বললেও ওসি রাজী না হয়ে পূনরায় চোখ বেধেঁ মাইক্রোবাসে করে একই উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের রাস্তায় মাথায় একটি নির্জন স্থানে নিয়ে ওসি মোর্শেদের নির্দেশে বেধড়ক পিটিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। একপর্যায় ওসি মোর্শেদ ঘটনাস্থলে সাথে থাকা সুকান্ত বড়ুয়া নামে এক পুলিশ সদস্যের শটগান নিয়ে দুলালের ডান পায়ে ৩ রাউন্ড গুলি করে। এরপর তারা এলোপাথারি লাথি মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করার চেষ্টা করে।পরে অজ্ঞাণ হয়ে পড়লে মৃত্যু হয়েছে ভেবে তারা ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে অবস্থা আশংকাজনক দেখে কতর্বরত চিকিৎসক চট্টগ্রাম মেডিকেলে প্রেরণ করে।সেখানে চিকিৎসকরা অস্ত্রোপাচার করে ডান পা কেটে বাদ দেয়। পরে ৭ দিন পুলিশের হেফাজতে চট্রগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফের তার বিরুদ্ধে ১৪শ পিস ইয়াবাসহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করে কারাগারে প্রেরণ করে তারা।
গিয়াস উদ্দিন বলেন, সোর্স আবুল হাশেম প্রকাশ বোমা হাশেম ও আবুল খায়ের ছোটন প্রকাশ দালাল ছোটন ঘটনার পর থেকে আদালতে প্রাঙ্গনে বেশকয়েক বার মামলা ও প্রাণ নাশের হুমকি দেয়। তিনি পঙ্গু হবার পর থেকে অসুস্থ, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মানবেতরভাবে জীবন যাপন করছেন তাই মামলা দায়েরে তার বিলম্ব হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেছেন তিনি।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী গিয়াস উদ্দিন নান্নু জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়েছেন।পরে আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে পুলিশ সুপারকে তদন্ত করে ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেয়।